
গত বৃহস্পতিবার রাতে কুষ্টিয়া শহরতলীর মোল্লা তেঘড়িয়া ক্যানেলপাড়া রান্না ঘর থেকে মাটি চাপা দেওয়া অবস্থায় রিমি (২২) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এদিকে লাশ উদ্ধারের ১ দিন পর রিমির স্বামী আলামিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ।
রিমি কুষ্টিয়ার হাটশ হরিপুর গ্রামের মিল্লাপাড়ার মাছ ব্যাবসায়ী কিরামত মালিথার মেয়ে । শুক্রবার হাটশ হরিপুর ইউনিয়ন গোরোস্থানে বাদ জুম্মায় রিমির লাশ দাফন করা হয়।
এর আগে গত ১৫ এপ্রিল রাত ৮ টার সময় রুবিনা নামে এক প্রতিবেশী বাড়ির ভিতরে পানি আনতে গেলে পঁচা গন্ধ পায়। বিষয়টি ঐ মহিলা বাড়ির মালিক মুরাদ হোসেনকে জানালে সে পুলিশকে সংবাদ দেয়। পুলিশ এসে গৃহবধূর অর্ধগলিত মাটি চাপা দেওয়া অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে। পুলিশের ভাস্যমতে আনুমানিক ১ মাস পূর্বে মৃত দেহটি মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য মৃত দেহটি কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
বাড়ির মালিক মুরাদ হোসেন জানায় গত ফ্রেব্রুয়ারি মাসে জেলার খোকসার বাসিন্দা আলামিন (২৫) ১ হাজার টাকা মাসিক চুক্তিতে বাসা ভাড়া নেয়। ওই বাসায় আলামিন ও তার স্ত্রী রিমি থাকত। আলামিন কুষ্টিয়া শহরের জাহাঙ্গীর হোটেলের মিষ্টি বানানোর কারিগর হিসাবে কাজ করত। গত ১ মাস যাবৎ ওই বাসায় ভাড়া থাকলেও আসত না। বাড়ির মালিক একাধিকবার মোবাবাইল ফোনে আলামিনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পায়নি। ৩ মাস আগে বাসা ভাড়া নেওয়ায় প্রতিবেশীরাও তেমনভাবে তাদের চিনতো ।
পারিবারিক কলোহের জেরে আলামিন তার স্ত্রী রিমিকে হত্যা করে মাটি চাপা দিয়ে পালিয়ে যায় বলে প্রতিবেশী ও পুলিশের ধারনা ।
ঘটনার পর পরই কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার খাইরুল আলম তাৎক্ষনিক ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও আসামী গ্রেফতারের নির্দেশ দেন।এ নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফরহাদ হোসেন খাঁন জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি টিম নিয়ে অভিযান শুরু করে ।
পরবর্তীতে পুলিশ সুপারের সময়োপযোগী নির্দেশনায় আধুনিক টেকনোলজী ও তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার সাথে জড়িত নিহতের স্বামী আল আমিন(২৩)কে শুক্রবার বিকাল ৩ টার দিকে ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা থানা পুলিশের সহায়তায় শৈলকুপা থানাধীন নবগ্রাম(কাতলাগারি) হতে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় আসামী এবং ভিকটিম পরস্পর স্বামী-স্ত্রী এবং ভিকটিম পরকীয়া আসক্ত মর্মে আসামীর সন্দেহ হওয়ায় গত ২৫/৩/২০২১ ইং তারিখ রাত সাড়ে ১০ টার দিকে আলামিনের ভাড়া করা বসত বাড়ীর শয়নকক্ষে উভয়ের মধ্যে কথাকাটির এক পর্যায়ে আসামী ভিকটিমকে স্বজরে ধাক্কা দিলে ভিকটিমের মাথা খাটের কোনায় লেগে গুরুতর রক্তাক্ত জখম ও রক্তক্ষরণ হয়।
এক পর্যায়ে আসামী ভিকটিম রিনিকে মৃত ভেবে লাশ বাসার ভিতর রান্নাঘরের মেঝেতে মাটির নিচে চাপা দিয়ে কৌশলে ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়।
এই সংক্রান্তে কুষ্টিয়া মডেল থানার মামলা নং-২৫ তারিখ-১৬/০৪/২০২১ ধারা- ৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু করা হয়। আসামী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারা মোতাবেক নিজেকে জড়িয়ে স্বেচ্ছায় বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।