
একই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিন্ন এজাহারে দুই থানায় মামলা !
কুষ্টিয়ায় নেতাকে কটুক্তির অভিযোগ এনে যুবলীগ নেতার করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারান্তরিন কলেজ শিক্ষক রাজিবুল আলম(৫২)র জামিন না মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার বেলা ১১টায় কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক তহিদুল ইসলামের আদালতে দাখিল করা জামিনাবেদনে এমামলার আসামীর পক্ষের কৌশুলী এ্যাড. আব্দুল বারী জানিয়েছেন, একই ঘটনায় জড়িত একই ব্যক্তি এবং একই এজাহারে দুই থানায় জিআর মামলা রেকর্ডভুক্তি বা চলানোই আইনগত কোন অপশন নেই। এই মামলাটি যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে উদ্ভুত হয়েছে সেই ঘটনায় অভিন্ন এজাহার আমলে নিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ঈশ^রদী থানায় একটি জিআর মামলা রেকর্ডভুক্ত হয়েছে। সুতরাং ঘটনাস্থল সংশ্লিষ্ট ঈশ^রদী থানায় রুজু হওয়া জিআর মামলা নং ৫৮১/২১ তারিখ: ০৬/১২/২০২১ মামলাটি চলমান থাকা অবস্থায় একই অভিযোগে করা কুষ্টিয়া মডেল থানায় করা মামলাটি চালু রাখার স্বপক্ষে আইনগত সমর্থন নেই বলে বিজ্ঞ আদালতকে অবহিত করেন এই কৌশুলী।
অপর কৌশুলী এ্যাড. এনামুল হক বলেন, রাজিবুল আলম তার নিজের ফেসবুক আইডিতে কোন পোষ্ট করেননি। তারই সহকর্মী অপর এক কলেজ শিক্ষকের দেয়া পোস্টের কমেন্টস বক্সে গিয়ে পোষ্ট সম্পর্কে কমেন্টস করার দায়ে তার বিরুদ্ধে এই মামলা হতে পারে না বলেই মনে করি।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারান্তরিন কলেজ শিক্ষক রাজিবুল আলমের স্ত্রী আসমা খাতুন বলেন, ‘আমি হতাশ, আমি আতঙ্কিত এবং শংকিত। উচ্চ আদালতের নির্দেশ মতে সংশ্লিষ্ট কুষ্টিয়া মডেল থানার আদালতে আত্মসমর্পন করার পর কারান্তরিন রাজিবুলকে পুলিশ রিমান্ডে দেয়াটাই হলো নির্যাতনের উদ্দেশ্যে। এছাড়া কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা হওয়ার ৮দিন পূর্বেই ঈশ^রদী থানায় রূপপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুদ্দিন পিন্টু বাদি হয়ে করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলাটি চলমান থাকা অবস্থায় কুষ্টিয়াতে ১৪ডিসেম্বর মামলাটি করেন যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমান মিজু ওই একই এজাজারে শুধুমাত্র বাদির নাম পরবর্তন করে। রাজিবুল স্থানীয় ভাবে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথেও জড়িত। কিন্তু শুধুমাত্র রাজনৈতিক ভিন্ন মতের কারনে ওকে একের পর এক হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে। এবিষয়টি তুলে ধরার জন্য ঈশ^রদীর সাংবাদিক ভাইদের অনেক অনুরোধ করেছি; কিন্তু তারা ভয়ে লিখতেও পারেনি বলে অভিযোগ করেন আসমা। আজ কুষ্টিয়া আদালতের সর্বোচ্চ বিচারকের রায়ে যেহেতু জামিন মঞ্জুর হয়নি; সেকারণে ন্যায় বিচার পার্থনা করে আমরা আবারও উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবো।
কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারী কৌশুলী এ্যাড. অনুপ কুমার নন্দী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কুষ্টিয়া মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার আসামী রাজিবুল আলমের জামিন শুনানী শেষে বিজ্ঞ আদালত জামিন নামঞ্জুর করেছেন।
উল্লেখ্য গত ১৪ডিসেম্ব কুষ্টিয়া মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যুবলীগ নেতার করা মামলায় সন্দিগ্ধ অভিযুক্ত কলেজ শিক্ষক রাজিবুল আলম উচ্চ আদালত থেকে ৮সপ্তাহের জামিন নিয়ে নির্দেশনা মতে গত ১৮ ফেব্রæয়ারী কুষ্টিয়া চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক হাবিবুল ইসলামের আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিনাবেদন করেন। আদালত জামিন না মঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
পরে গত ৫মার্চ কারান্তরিন রাজিবুল ইসলামের ৫দিনের রিমান্ড আবেদন করেন পুলিশ। আদালত ১দিনের পুলিশ হেফাজতে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এআগে জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে করা জামিনাবেদন না মঞ্জুর হওয়ায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিনাবেদন করেন রাজিবুলের আইনজীবী। আদালত বুধবার মামলাটির জামিনাবেদন শুনানীর দিন ধার্য করেছিলেন।