
কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলার ৭নং হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নে ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে দারুল আকরাম ইবতেদায়ী মাদ্রাসা (পুরুষ) ও সোনাইকুন্ডি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় (মহিলা) ভোটের ফলাফল কারচুপির অভিযোগ এনে কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব কেপিসিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন (১,২,৩) নং সংরক্ষিত আসনের সদস্য পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী পরাজিত প্রার্থী মোছাঃ বুলয়ারা খাতুন।
বুধবার বেলা ১২টায় সংবাদ সম্মেলনে তিনি সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে লিখিত বক্তব্যে বলেন, হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের নির্বাচনে আমরা তিন জন প্রার্থী সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে প্রার্থীতা করেছি। ১ ও ২ নং ওয়ার্ডে সুষ্ঠু সুন্দর ভোট হলেও ৩ নং ওয়ার্ডের দুইটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহন শেষে গননার সময় আমার নিয়োগকৃত এজেন্টকে বের করে দিয়ে গননার ফলাফল ঘোষনা করেন প্রিজাইডিং অফিসার। তাৎক্ষনিক ভাবে গননা শেষে আমাদের লিখিত প্রাপ্ত ভোটের তালিকা না দিয়ে উপজেলায় চলে যান প্রিজাইডিং অফিসার। মৌখিক ভাবে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা সূর্যমুখী ফুল ৩ শত ৭০ ঘোষনা করলেও উপজেলা থেকে পরের দিন যে তালিকা দেওয়া হয় তাতে ২ শত ৭০ লিখিত তালিকা দেওয়া হয়। উল্লেখ্য যে, দারুল আকরাম ইবতেদায়ী মাদ্রাসা (পুরুষ) কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ২৪৭৫ এর মধ্যে ক্রমিক নং ১, মোছাঃ জেসমিন হেলিকপ্টার প্রতিক পেয়েছে ৭২৩ (সাত শত তেইশ) ক্রমিক নং-২, মোছাঃ বুলুয়ারা খাতুন, সূর্যমূখী প্রতিক ২৭০ (দুই শত সত্তর), ক্রমিক নং-৩, মোছাঃ রনজনা বেগম, বক প্রতিক ৫৫৩ (পাঁচ শত তেপান্ন) তিনজন প্রার্থীর মোট বৈধ ভোটের সংখ্যায়-১৫৪৬ এবং অবৈধ ভোটের সংখ্যা দেখানো হয় ৯২৯(নয়শত উনত্রিশ) বৈধ ও অবৈধ ভোটের ফলাফল যোগ করলে দেখা যায় এই কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পোল হয়েছে। অভিযোগ কারী বুলায়ারা খাতুন বলেন, প্রাপ্ত ভোটের বৈধ ও অবৈধ ভোটার সংখ্যায় ব্যাপক গড়মিল রয়েছে। এই কেন্দ্রে একজন ভোটারও অনুপস্থিত নেই যা অসম্ভব। অভিযোগ করে তিনি আরো বলেন, ভোট গ্রহন শেষে ফলাফলের সময় কোনো মেশিন ও প্রিন্ট কপি দেওয়া হয়নি। এছাড়া ভোট গননার সময় আমার এজেন্টকে বের করে দিয়ে প্রাপ্ত তালিকায় অন্য মানুষের স্বাক্ষর দেখানো হয়েছে। প্রাপ্ত তালিকায় মোট ভোটার ও অনুপস্থিত ভোটার সংখ্যা ঘর সম্পূর্ন ফাঁকা তালিকা প্রার্থীদের দেওয়া হয়েছে উপজেলা থেকে। এছাড়াও তিনি সোনাইকুন্ডি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় (মহিলা) ভোট কেন্দ্রের গড়মিল তুলে ধরে রিখিত বক্তব্যে বলেন, এই কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ২৪৭৭ জন, এখানে বৈধ ভোটার সংখ্যা- ১,৪৭৭ ( চৌদ্দশত সাতাত্তর) এবং অবৈধ ভোটার সংখ্যা ২২৭(দুইশত সাতাশ) অথচ প্রিজাইডিং অফিসার তার তালিকায় উপস্থিত ভোটার দেখিয়েছেন ১,৭৩০( সতেরশত ত্রিশ) এবং অনুপস্থিত ভোটার সংখ্যা ৭৪৭( সাতশত সাতচল্লিশ) এখানে বৈধ ও অবৈধ ভোটার তালিকার প্রাপ্ত লিখিত ফলাফল অনুযায়ী ব্যাপক গড়মিল রয়েছে। প্রাপ্ত ফলাফলে বৈধ ভোটার এবং উপস্থিত সংখ্যায় ২৬ ভোটের ব্যবধান রয়েছে। তিনি বলেন, প্রিজাইডিং অফিসার অনিয়মের মাধ্যমে রেজাল্ট শিটে আমার ভোট সংখ্যা কম দেখিয়ে আমাকে পরাজিত করেছে।
এব্যাপারে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করলেও তিনি তা নিতে অস্বীকার করেন। বিষয়টি নিয়ে জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তার সাথে সরাসরি উপস্থিত হয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি নজরে নিয়ে বলেন, এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা ছাড়া তাদের আর কিছু করার নেই বলে পরামর্শ দেন।
পরাজিত প্রার্থী বুলুয়ারা খাতুন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ফলাফল কারচুপি না হলে তিনি ব্যাপক ভোটে নির্বাচিত হতেন। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি জেলা প্রশাসক, নির্বাচন কমিশনারসহ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করে ভোট পুনরায় গননার দাবি জানিয়েছেন।