ঢাকাSaturday , 6 November 2021
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন ও আদালত
  4. আজকের ভিডিও খবর
  5. উপজেলার খবর
  6. কুষ্টিয়া
  7. খেলাধুলা
  8. চুয়াডাঙ্গা
  9. জেলার খবর
  10. টপ নিউজ
  11. পর্যটন
  12. প্রবাসীদের খবর
  13. ফিচার
  14. বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
  15. বিনোদন
আজকের সর্বশেষ সবখবর

গাংনী ভাটপাড়ার ক্যারল ব্রুমের জরাজীর্ণ ভবন: নীলকরের নির্যাতনের সাক্ষী

Link Copied!

মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার ভাটপাড়ার চারপাশে আগাছার মধ্যে জরাজীর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে একটি দোতলা ভবন । দর্শকের দৃষ্টি কাড়ার মত এমন কিছু নেই এ ভবনে। কিন্ত এর ভয়ংকর ইতিহাস বিবশ করে দেবে মানুষকে। এ ভবনের কড়ি বর্গা বহন করে চলেছে নির্যাতন আর উৎপীড়নের কাহিনী। সেই উৎপীড়কএকজন ইংরেজ । নাম ক্যারল ব্রæম।

 

 

ষোড়ক শতকের শেষ দিকে এ দেশে শুরু হয় নীলচাষ। সে নীল চালান হতো ইংলান্ডে। বিপুল লাভ জনক ব্যবসা ছিল তখন। ইংরেজরা তখন জমিদারী কিনে শুরু করে নীলচাষ। নীলকর সাহেবদের নিপীড়ন আর নির্যাতন নিয়ে দীনবন্ধু মিত্র লেখেন নীল দর্পন। এই নিপীড়ক জমিদারদের একজন ক্যারল ব্রæম। ১৭৯৬ সালের দিকে তৎকালীন নদীয়া জেলার মেহেরপুর মহকুমায় নীলচাষ শুরু হয়। এই সময় বর্গী দস্যূ নেতা রঘুনাথ ভোসালীর সঙ্গে সম্মুক সমরে গোয়ালী চৌধুরী নিহত হলে মেহেরপুর রানী ভবানীর জমিদারীভুক্ত হয়। পরবর্তীতে রানী ভবানীর হাত থেকে কাসিম বাজার হরিণাথ কুমার নন্দী ক্রয় করেন । হরিণাথ নন্দী ইতিহাসে কুখ্যাত নীলকর জেমস হিলের কাছে মেহেরপুর ইজারা দেন। কিন্ত জমিদার মধুরানাথ মূখার্জী নীলকর জেমস হিলের নীলচাষ বন্ধ করার জন্য প্রচেষ্টা চালান। ফলে জেমস হিলের সঙ্গে তার বিবাদ হয়। তার প্রতিশ্রæতিতে জমিদার মথুরানাথ মুখার্জী জেমস হিলকে মেহেরপুরের কর্তৃত্ব নিতে দেননি। পরে তার পুত্র চন্দ্র মোহন মোট অংকের অর্থের নজরানা দিয়ে মেহেরপুর জেমস হিলের হাতে তুলে দেন । চন্দ্র মোহনের পুত্র মহেষ মুখোপাধ্যায় জেমস হিলের মন্ত্রী নিযুক্ত হয়েছিলেন। তিনিই নীল দর্পন। নাটকে গুপে দেওয়ান নামে খ্যাত হয়েছেন।

 

১৮১৫সাল থেকে ১৮২০ সালের মধ্যবর্তী সময়ে মেহেরপুরের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানের মধ্যে নীলকুঠি ও আমঝুপি নীলকুঠি প্রধান। এ ছাড়াও গাংনীর কাথুলী ,সিন্দুর কোটা ,বামন্দী ,সাহেবনগর, মহম্মদপুর, ষোলটাকা, বেতবাড়িয়া, কাজীপুর, গোয়ালগ্রাম নীলকুঠি বিশেষভাবে উল্লেখ্যযোগ্য।

 

নীল গাছ দেখতে আনেকটা ভাং বা গাঁজা গাছের মত। এই গাছ সাধারনত; ৪/৫ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। বছরে দুইবার নীল গাছের চাষ করা হতো। বৈশাখÑজৈষ্ট্যও আশ্বিন Ñ কার্তিক মাসে নীল গাছ কেটে পাটের মত আটি বেঁধে সান বাধানো হাউজে পচান দেয়া হতো। সেই পচানো পানি জ্বালিয়ে শুকিয়ে নীল রং তেরি করা হতো। ১ বিঘা জমিতে আড়াই থেকে ৩ কেজি নীল উৎপাদন হতো। এই ৩ কেজি নীল উৎপাদন করতে খরচ পড়তো ১২ টাকা থেকে ১৪ টাকা ।

 

অথচ চাষীরা কুটিয়ালদের কাছ থেকে পেতো মাত্র ৩ আনা \ এ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কোন নীল চাষী প্রতিবাদ করলে তাদেরকে হত্যা করে লাশ গুম করা হতো। নীল করদের অত্যাচারের কাহিনী সব জায়গায় প্রায় একই রূপ। ভাটপাড়া নীলকুঠিতে এখনো নীল গাছ আগাছার ন্যায় চারপাশে ছড়িয়ে আছে। এই আগাছা নীল গাছ অতিতের নীল চাষীদের আর সেই হৃদয় বিদারক অত্যাচারের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।