
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে আকিজ বিড়ি কারখানায় শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ হয়েছে। শ্রমিকদের থামাতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে। এতে একজন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫ জন শ্রমিক। শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার হোসেনাবাদে আকিজ বিড়ি কারখানার মূল ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা প্রায় ৬ ঘন্টা ধরে সড়ক অবোরধ করে রাখে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে কারখানায় প্রবেশের নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর বেশ কিছু শ্রমিক ঢোকার চেষ্টা করে। কারখানার নিরাপত্তা কর্মীরা বাধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে বাক-বিতন্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে উঠলে কারখানা ম্যানেজার আমিনুল ইসলাম পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে শ্রমিকদের সেখান থেকে জোর করে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে তারা ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্য করে। পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এতে শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ ঘটনায় একজন শ্রমিক গুলিবিদ্ধসহ অন্ততপক্ষে ৫ জন আহত হন। গুলিবিদ্ধ শ্রমিকের নাম শিপুল ইসলাম। তবে পরে কারখানার সমস্ত শ্রমিক কাজ বন্ধ করে হোসেনাবাদ বাজারে কুষ্টিয়া-প্রাগপুর সড়ক অবরোধ করে। তাদের সাথে উপজেলার ফিলিপনগর কারখানার শ্রমিকরাও যোগ দেয়। তারা অবিলম্বে ম্যানেজারের অপসারণ দাবি করেন। এছাড়া তারা আরো কয়েক দফা দাবি পেশ করেন। প্রায় ৬ ঘন্টা পর বেলা ৩টার দিকে শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়ার ব্যাপারে প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন শ্রমিকরা। দীর্ঘক্ষণ সড়ক অবরোধের ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়ে ওই সড়কে যাতায়াতকারী মানুষ।
কারখানা শ্রমিক বিল্লাল হোসেন অভিযোগ করের বলেন, সম্প্রতি ভোর ৪টা থেকে সকাল ৭টার মধ্যে কারখানায় প্রবেশের নিদের্শনা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু দূর-দূরান্ত থেকে আসা অনেক শ্রমিক ওই সময়ের মধ্যে কারখানায় আসতে পারেনা। এছাড়া শ্রমিকদের সপ্তাহ শেষে যখন মজুরী দেওয়া হয় তখন তাদের ২দিনের পারিশ্রমিক কেটে রাখা হয়। পরে সপ্তায় একই ভাবে ৪ দিনের মজুরী দেওয়া হয়। এসব কারণে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। এ কারণে গতকাল শ্রমিকরা আন্দোলনে নামে।
এ ঘটনায় কারখানা ম্যানেজারের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। দৌলতপুর থানার ওসি (তদন্ত) শাহাদত হোসেন জানান, তারা আত্মরক্ষার্থে ৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।