
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বেড়েই চলেছে পদ্মার পানি। ফলে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। উপজেলার ভাগজোত পয়েন্টে বুধবার সকাল ৬ টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬ টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় পদ্মার পানি আরো .১৩ সেন্টিমিটার বেড়েছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তবে এই পয়েন্টে এখনো বিপদসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে।
এদিকে অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে মহিষকুন্ডি-রায়টা বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধ হুমকির মুখে রয়েছে। উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের ইসলামপুর-গোলাবাড়িয়া পর্যন্ত নদী রক্ষা বøকের প্রায় ৫৪০ মিটার এলাকা দিয়ে নদীর পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
গত ২৪ ঘন্টার উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়নের আরো প্রায় ১০টি গ্রামে নতুন করে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। সব মিলিয়ে ইউনিয়ন দুটির অন্তত ৩০টি গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ফলে পরিবার পরিজন নিয়ে চরম মানবেতর জীবন যাপন করছেন পদ্মা চরের মানুষগুলো।
এদিকে, গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি দৌলতপুরের বন্যাকবলিত এলাকায় দুর্ভোগ বাড়িয়েছে। মানুষের মধ্যে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ বালাই দেখা দিয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকায় সবচেয়ে ঝুকির মধ্যে পড়েছে বৃদ্ধ ও শিশুর। তাদের জীবনের নিরাপত্তাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে। অনেকের বাড়িঘরে কোমর পর্যন্ত পানি হয়ে পড়ায় শিশুদের পানিতে ডুবে যাওয়ার আশংক রয়েছে। গত বুধবার চিলমারীর খারিজাথাক (বাংলাবাজার) গ্রামে বন্যার পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, পদ্মার পানি বৃদ্ধির ফলে অতিরিক্ত পানির চাপে রায়টা-মহিষকুন্ডি বাধ হুমকির মুখে পড়েছে। ফিলিপনগর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি জায়গায় বন্যা নিয়ন্ত্রন বøকের উপর দিয়ে বন্যার পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়া রোধে বৃহস্পতিবার থেকে ফিলিপনগরের নদী পাড়ের কিছু এলাকায় বালিভর্তি জিও ব্যাগ ফেলেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। ইসলামপুর-গোলাবাড়িয়া পর্যন্ত নদী রক্ষা বøকের প্রায় ৫৪০ মিটার এলাকা দিয়ে নদীর পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। নদীর পাড়ে সমতল ভুমি থেকে জায়গা ভেদে ৬-৮ ইঞ্চি নিচে পানি অবস্থান করছে। এ বিষয়ে দ্রত পদক্ষেপ নেয়ার দাবী জানান স্থানীয়রা।
ফিলিপনগর গ্রামের বাসিন্দা মাহবুবুর রহমান মাষ্টার দ্য কুষ্টিয়া রিপোর্ট কে বলেন, ফিলিপনগর ইউনিয়নের নদী রক্ষা স্থায়ী বøকের পুরো এলাকাজুড়েই পানি উপচিয়ে বন্যার পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ার আশংকা দিখা দিয়েছে। অবিলম্বে বালিভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে পানি নিয়ন্ত্রন না করলে উপজেলার অধিকাংশ এলাকা বন্যায় তলিয়ে যাওয়ার যাবে।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মসফিকুর রহমান দ্য কুষ্টিয়া রিপোর্ট কে বলেন, লোকালয়ে পানি ঢোকার জায়গাগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। ফিলিপনগর ইউনিয়নের ৫৪০ মিটার এলাকাকে প্রাথমিক ভাবে ঝুকিপূর্ণ ধরে কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। বৃহস্পতিবার সকালে প্রায় ১৪০ মিটার এলাকায় জিও ব্যাগ ও বালি র্ভর্তি বস্তা ফেলে নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশের পথগুলো বন্ধ করা হয়েছে।
দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার দ্য কুষ্টিয়া রিপোর্ট কে বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের সার্বক্ষনিক খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। স্থানীয় চেয়ারম্যানদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। শুক্রবার থেকে পানিবন্দি মানুষের মাঝে সরকারী বরাদ্দের খাদ্য সহায়তা ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরন করা হবে।