
আজমত আলী, পেশায় একজন সিএনজি চালক, হুবহু গাইতে পারেন উপমহাদেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মান্না দের গান। তিনি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুন্ডি গ্রামের বিশ্বাস পাড়ার পলান শেখের ছেলে । বর্তমানে তিনি জেলার মিরপুর উপজেলারধুবইল ইউনিয়নের কাদেরপুর গ্রামের বাসিন্দা।
আজমত আলী মান্না দের গান হুবহু গাইতে পারেন বলে এলাকার সঙ্গিতপ্রিয় মানুষ তাকে ডাকেন ‘মান্নাদে’ সম্বোধনে।
আজমত আলী একদিন বড় শিল্পী হবেন এই স্বপ্ন নিয়ে মাত্র ১২ বছর বয়সে বড় ভাই আক্কাস আলীর কাছে গান শেখা শুরু করেছিলেন । কিন্তু অল্প বয়সে বিয়ে করে সংসারী হয়ে যাওয়ায় বড় কন্ঠশিল্পী হবার রেসে থাকতে পারেননি তিনি। জীবিকার প্রয়োজনে আন্তঃজেলা ট্রাক ড্রাইভারী করতে হচ্ছে তাকে। ব্যাস্ততার মাঝেও বিভিন্নস্থান থেকে গান গাইবার আমন্ত্রন পান তিনি। বেশি ব্যাস্ততা থাকলে ইচ্ছা থাকা সত্বেও অনেকের গান গাইবার আমন্ত্রন রক্ষা করতে পারেন না। আর যখন ব্যাস্ততা থাকে না তখন আমন্ত্রন পেলে ষ্ট্রেজ অথবা ঘরোয়া গানের আসরে গান পরিবেশন করেন।
ষ্ট্রেজ কিংবা ঘরোয়া অনুষ্ঠানে আজমত আলী মান্নাদে’র আমি যে জলসা ঘরে, কি দেখলে তুমি আমাতে, কফি হাউজের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই, ‘ক’ ফোটা চোখের জল ফেলেছো তুমি, হাজার টাকার ঝাড় বাতিটা, শাওন রাতে যদি, সুন্দরী গো দোহায় মান করো না ও কাল কিছুতে ঘুম এলোনা সহ জনপ্রিয় গানগুলো গাইতে থাকেন তখন সেখানে উপস্থিত দর্শকরা মোহাচ্ছন্ন হয়ে আজমত আলীর সুরের জাদুর মাঝে হারিয়ে যান।
দুই ছেলে, এক,মেয়ের জনক আজমত আলীর একমাত্র প্রিয় শিল্পী মান্নাদে। তাই দেশ-বিদেশের অন্য কোন শিল্পীর গান তিনি কখনো তাঁর কন্ঠে গাইতে চেষ্টাও করেন না। তবে সময় পেলে মাঝে মাঝে তিনি পাকিস্থানের গজল সম্রাট গোলাম আলী ও ভারতের অনুপ জালোটার গান শুনে থাকেন।
এলাকার সঙ্গিত বোদ্ধাদের ধারনা সরকারীভাবে যথাযথ পৃষ্টপোষকতার মাধ্যমে নিবিড় সঙ্গিত চর্চার সুযোগ পেলে ট্রাক ড্রাইভার আজমত আলী বাংলাদেশের মান্নাদে হিসাবে আবির্ভূত হতে পারতেন।
আজমত আলী ৩০ বছর অন্যের ট্রাকে ড্রাইভারী করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। গত ৬ বছর নিজেই একটি সিএনজি কিনে কুষ্টিয়া-বামুন্দি রুটে ভাড়ায় চালান ।