অ্যাম্বুলেন্সে মরদেহ যখন শ্মশানে পৌঁছায় তখন মধ্যরাত। সে সময় শ্মশান প্রাঙ্গণে দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা নিজ নিজ বাড়িতে।
শ্মশান গেট তালা। দায়িত্বপ্রাপ্তরা তালার চাবি দিলেও শ্মশানে আসেননি। কারণ, মৃত ব্যক্তি ছিলেন করোনা আক্রান্ত। লোকজন না থাকায় শ্মশানে লাশটি নামানো সম্ভব হয়নি। এর খানিক বাদে মরদেহ নামিয়ে ফেরত যায় অ্যাম্বুলেন্স। ফেরত যান সাথে থাকা অন্যান্যরাও।
গভীর রাতে সবাই ফেরত গেলেও ফেরত যাননি একজন।
তিনি মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তির স্ত্রী। শ্মশানের পাশে গোপালপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় স্বামীর মরদেহ নিয়ে সৎকারের উদ্দেশ্যে একাই পার করেন পুরো রাত। মধ্যরাত থেকে সকাল অবধি অপেক্ষার পরও মরদেহ সৎকারে শ্মশান কমিটি বা নিজ আত্মীয়-স্বজনের সাহায্য না পেয়ে কয়েকজন মুসলিম ব্যক্তির সহায়তায় ওই মরদেহ মাটি চাপা দেন।
ঘটনা ঘটেছে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পৌর শ্মশানে।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জেলার মিরপুর পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের হরিতলা এলাকার প্রফুল্ল কর্মকার (৭০) শনিবার কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে মারা যান। তিনি গত ২৭জুন করানো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
গত রাতে মারা গেলে তার পরিবার কুষ্টিয়া সদর হাসপাতাল থেকে এম্বুলেন্স যোগে লাশটি নিয়ে এসে বাড়িতে না নিয়ে গিয়ে সুলতানপুর গ্রামের পৌর মহাশ্মশানে নিয়ে যান।
পরে দেরী হচ্ছে দেখে উপায়ন্তর না পেয়ে এম্বুলেন্স ড্রাইভার রাত তিনটার দিকে মৃতদেহটি গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ফেলে রেখে চলে যান।
রবিবার সকাল ৭টা পর্যন্ত আত্মীয় স্বজন কেউ শেষকৃত্য না করায় সুলতান গ্রামের স্থানীয় যুবক রজিব(৩০) শ্মশানের পাশেই কবর খুড়েন এবং সুমন খান,সলেমান,রাজিব,রুবেল নামের যুবকদের সহায়তায় তাকে মিরপুর পৌর মহা শ্মশানে সমাহিত করেন বলে জানা গেছে।