ঢাকাSunday , 13 March 2022
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন ও আদালত
  4. আজকের ভিডিও খবর
  5. উপজেলার খবর
  6. কুষ্টিয়া
  7. খেলাধুলা
  8. চুয়াডাঙ্গা
  9. জেলার খবর
  10. টপ নিউজ
  11. পর্যটন
  12. প্রবাসীদের খবর
  13. ফিচার
  14. বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
  15. বিনোদন
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সংবাদপত্রের ফেরিওয়ালা একজন নূরুল ইসলাম

Link Copied!

১৮টি বছর কাটিয়ে দিলেন পত্রিকার প্রেমে

“কে ওই শোনালো মোরে আযানের ধ্বনি, মর্মে মর্মে সেই সুর বাজিল কি সুমধুর ; আকুল হইলো প্রাণ নাচিল ধ্বমনী?
ঠিক তেমনি ফজরের আযানের সমুধুর কন্ঠ শুনে ঘুম ভাঙ্গে মেহেপুরের গাংনী উপজেলার পশ্চিম মালশাদহ গ্রামের নূরুল ইসলামের। ছয় ভাই বোনের মাঝে সে মেজো। এক কন্যা সন্তানের জনক সে। অনেকে তাকে মেজো ভাই বা মাইজ ভাই বলেও ডাকেন আঞ্চলিক ভাষায়।

 

 

নূরুল ইসলাম কখনো পায়ে হেঁটে,কখনো পুরনো ভাঙ্গাচোরা একটি বাই সাইকেলে বা মটর সাইকেলে মেহেরপুর পেপার হাউজে যান। এখন পায়ে হেঁটেই কাজ করতে হয়। সব বাহনগুলোই এখন নষ্ট হয়ে পড়ে আছে।এখন এগুলো শুধুই স্মৃতি। মেহেরপুর পেপার হাউজ থেকে পেপার নিয়ে গাংনী উপজেলার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে রোদ, বৃষ্টি,ঝড় মাথায় নিয়ে, মাঘের হাড় কাঁপানো শীতের প্রচন্ডতাকে উপেক্ষা করে জীর্ন শীর্ণ শরীরে,ভাল কোন পোশাক নেই তার শরীরে, মাথার পাকা চুলগুলো আঁচড়ানোর সময় নেই তার। এমনকি নরসুন্দরের কাছে চুল কাটানোর সময় পর্যন্ত পাইনা যেন,এটা কি তার পত্রিকার প্রতি ভালবাসা না-কি? একটু বেখেয়ালে স্বভাবের। যাই হোক হয়তো নিজের শরীরের চাইতে এই পেশাটিকে একটুও বেশি ভালবেসেই সংবাদপত্র নিয়ে দিনরাত নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এই সাদা মনের মানুষটি। এমনকি পরের দিন পর্যন্ত চলে এই সংবাদপত্র পৌঁছে দেওয়ার কাজ। এই কাজে ব্যস্ত থাকতে গিয়ে দিন গড়িয়ে সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে পড়েছে সেদিকে তার নজর নেই। মুখটা মলিন দেখে সবাই জিজ্ঞেস করে নূরুল ভাই কেমন আছেন? হাসিমুখেই উত্তর দেন সহজ সরলভাবে ভাল আছি, সারাদিন পত্রিকা বিক্রি করতে গিয়ে নিশ্চয় সকাল, দুপুরে কিছু খাওয়া হয় নাই? সবার হাতে পত্রিকা দিয়ে তারপর খাব। এভাবেই চলছে তার বছরের প্রায় ৩৬৫ দিন।

 

 

১৯ ফেব্রুয়ারি ২০০৪ইং তারিখ থেকে খালাত ভাই সাংবাদিক শাহীনুজ্জামান (শাহীনের) পরামর্শেই মূলত এই পেশাতে আসা। ইতোপূর্বে ১৯ জুন ১৯৮৩ ইং সন হতে ২৮ মার্চ ১৯৯১ ইং সন পর্যন্ত গাংনী সোনালি ব্যাংকে অফিস বয় হিসাবে কাজ করতেন। লেখাপড়া অল্প জানার কারনে সমস্যা হওয়ায় তাকে চলে আসতে হয় সেখান থেকে। দীর্ঘদিন কষ্টে থাকার কারনেই এই পেশাতে পদার্পণ। পত্রিকার সাথে মিতালি করতে গিয়ে সংসারের অভাব অনটনের জন্যই তার সংসারটাই ভেঙ্গ গেছে।একটি কন্যা সন্তানের জনক এই নূরুল ইসলাম। কন্যা সন্তানের বিয়ে দিয়েছেন অনাহারে অর্ধাহারে অনেক কষ্টে । নিজের স্ত্রী সংসার ছেড়ে চলে গেছে অভাব অনটনের তাড়নায়, একমাত্র কন্যা শ্বশুর বাড়ি। তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে জনম দু:খিনী বৃদ্ধ মা।বৃদ্ধ মায়ের হাতের রান্না খেয়ে, না খেয়েই চলছে তার জীবনযাত্রা। নূরুল ইসলাম দুমড়ে মুচড়ে ভেঙ্গে পড়েননি এমনকি সংবাদপত্র বিক্রিও ছাড়েননি। এটা যেন তার রক্তে মিশে গেছে। তার হৃদয়ের মনিকোঠায় স্থান করে নিয়েছে এই সংবাদপত্র। অনেকেই এই সরল মানুষটির সাথে করেছে প্রতারনা। সংবাদপত্রের বিলটা কেউ দিয়েছে কেউবা দেয়নি। তাতে তিনি কোনদিন কারও সাথে খারাপ ব্যবহার করেননি। নিয়তির উপর ছেড়ে দিয়েছেন। এভাবে আর কতদিন? ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আজকে সে সংবাদপত্রের ফেরিওয়ালা। এই সমাজের কুটিল চাটুকারি ব্যক্তিরা,পত্রিকার বিল না দিয়ে হয়তো দোতলা তিন তলা বাড়ি করেছেন। বিলাসবহুল গাড়িতে এসি লাগিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন! তাতে কী নূরুল ইসলামের কাছে সারা জীবন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবেন?সেই হাসিখুশি ভরা দিনগুলি ফিরিয়ে দিতে পারবেন কি কেউ? সংবাদপত্রের ভালবাসায় সে আজ সর্বস্ব হারিয়ে নি:স্ব। একমাত্র বাড়ির জায়গাটুকুও রাহুগ্রাসের চেষ্টা চালাচ্ছে তারই আপনজনেরা।তাহলে তার মাথা গোজার ঠাঁয় টুকু কি চলে যাবে কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্রে? আসুন আজ তার বিপদের দিনে একটু তার পাশে দাঁড়ায়।সমাজের বহু বিত্তশালী হৃদয়বান ব্যক্তিদের প্রতি এই প্রতিবেদকের আকুল আবেদন আসুন তার পাশে দাঁড়ায়। অসহায় বৃদ্ধ মায়ের রান্না করা ভাত এক বেলা হয় আরেক বেলা উপোষ থাকতে হয়। মানুষটি কখনো কারো কাছে হাত পাতেননি। তাই আসুন সংবাদপত্রের সাথে সংশ্লিষ্ট যারা অাছেন তাদের প্রতি আকুল আবেদন আসুন এই সাদা মনের মানুষটির পাশে দাঁড়ায়।আমাদের শ্রদ্ধেয় সাংবাদিক নূরুল হুদা ওরফে নূহু-বাঙ্গালী সময়ে অসময়ে তার পাশে দাঁড়িয়েছেন। এই মানুষটি ব্যতীত কেউ তার পাশে দাঁড়ায়নি কখনো। সবাই তাকে ব্যবহার করেছে নিজের প্রয়োজনে। অথচ সে খেয়েছে কী- না তার খোঁজ কেউ কী কখনো রেখেছি? তাই আবারো উদাত্ত্ব আহ্বান জানায় সমাজের বিত্তবান মানুষদের কাছে, এইসব অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ায় স্নেহের পরশে মাথায় হাতটি রেখে বলি, মানবতার ফেরিওয়ালা, সংবাদপত্রের ফেরিওয়ালা, সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত যিনি খেয়ে না খেয়ে ১৮টি বছর কাটিয়ে দিলেন পত্রিকার প্রেমে তার জন্য কী আমাদের কিছুই করার নেই?

 

প্রয়োজনে অনুরোধে মোবাইল নম্বর ০১৭৫৮-০৬৭৮৮২ । সকালে চায়ের কাপে চুমুক দেওয়ার পূর্বেই নূরুল ভাই সংবাদ পত্র নিয়ে হাজির হন সংবাদপত্র প্রেমিক মানুষের দুয়ারে দুয়ারে।সবার ভাগ্যের পরিবর্তন হলেও তার ভাগ্যাকাশে কবে সৃূর্য উদিত হবে? না-কী এভাবেই নিদারুন দু:খ,কষ্ট নিয়ে একদিন চিরন্তন সত্য নিয়মে এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেত হবে এ জিজ্ঞাসা সুধীমহলের?

 

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।